চকচকে ত্বকে হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠে একটা ব্রণ। আর সেই একটা থেকে অল্প দিনেই ১০ টা। আর তারপর যত সময় এগোতে থাকে, ততই ব্রণের সংখ্যা বাড়তেই থাকে। সেই সঙ্গে ত্বকের বারোটা বেজে যেতেও সময় লাগে না। আর এমন ঘটনা যখন ঘটতে থাকে, তখন রাতের ঘুম তো ওড়েই, সেই সঙ্গে থাকে ত্বক খারাপ হয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তাও।
এই লেখায় এমন কতগুলি ঘরোয়া টোটকা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যা ব্রণর প্রকোপ তো কমেই, সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই চটজলদি জেনে ফেলা যাক সেই সব ঘরোয়া উপাদানগুলি সম্পর্কে যা ব্রণের মতো ত্বকের রোগের চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১.তুলসি পাতা এবং হলুদ:
২০ টা তুলসি পাতার সঙ্গে ২ চামচ হলুদ গুড়ো ভাল করে মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর সেই পেস্টটি প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানিতে হাফ চামচ করে মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। এইভাবে ১৫-২০ দিন টানা খেলে দেখবেন ব্রণের প্রকোপ কমতে সময় লাগবে না। আর যদি দিনে তিনবার এই পেস্টটি খেতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই! আসলে তুলসি পাতা এবং হলুদে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. নিম এবং গোলাপ জল:
চটজলদি ব্রণর প্রকোপ যদি কমাতে হয়, তাহলে নিম এবং গোলাপ জলকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই দুটি উপদানে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান একদিকে যেমন ব্রণর প্রকোপ কমায়, তেমনি ত্বকের অন্দরে পি এইচ লেভেল বাড়তে শুরু করে। ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো নিম পাতা নিয়ে ২-৩ মিনিট জলে ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পাতাগুলি সংগ্রহ করে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এবার সেই পেস্টের সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়ে তা মুখে লাগানো শুরু করলেই দেখবেন কেল্লাফতে! প্রসঙ্গত, সপ্তাহে ৩-৪ দিন এইভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবেন ব্রণর মতো ত্বকের রোগ সেরে যেতে সময় লাগবে না।
৩. সেলিসেলিক অ্যাসিড:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে এই উপাদানটি রয়েছে এমন ক্রিম মুখে লাগাতে শুরু করলে ব্রণর প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। তা হল এমন ক্রিম বেশি মাত্রায় লাগালে ত্বকের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
৪. অ্যালো ভেরা জেল:
মাঝে মাঝে ব্রণের কারণে সারা মুখ জ্বালা করতে শুরু করে। আর তখনই আমরা খুঁটে ফেলি ব্রণগুলো। ফলে সারা মুখ দাগে দাগ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে অ্যালো ভেরা জেল ভালো কাজে আসতে পারে। এটি ব্রণের যন্ত্রণা কমানোর পাশাপাশি প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ত্বককে সুন্দর করে তুলতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে।
৫. বরফের কেরামতি:
ব্রণর প্রদাহ কমাতে এক্ষেত্রে আরেকটি জিনিস দারুন কাজে আসে, তা হল বরফ। মুখের যেখানে যেখানে ব্রণ বেরিয়েছে, সেখানে সেখানে বরফ ঘষা শুরু করুন। অল্প দিনেই দেখবেন ফল মিলতে শুরু করেছে।
৬. কাজে লাগান টুথপেস্টকে:
শুনতে একটু আজব লাগছে, কি তাই তো! তবে ব্রণ কমাতে টুথপেস্ট কিন্তু দারুন কাজে আসে। অল্প করে সাদা টুথপেস্ট নিয়ে ব্রণর উপর লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিন। সকালে দেখবেন ব্রণ একেবারে গায়েব হয়ে গেছে।
৭. ডায়েটের দিকে নজর দিতে হবে:
খাওয়ার সঙ্গেও কিন্তু ব্রণের একটা সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই এই ধরনের ত্বকের রোগের প্রকোপ কমাতে ডায়েটের দিকে নজর দেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। এখন প্রস্ন হল কী কী খাবার খেতে হবে এবং কী কী এড়িয়ে চলতে হবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে প্রথমে ত্বকের প্রকৃতি বুঝে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। তাই এক্ষেত্রে একজন দক্ষ ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
৮. জলের যাদু:
দেহের মধ্যে টক্সিক উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করলেও অনেক সময় ব্রণের প্রকোপ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বার করে দিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়াটা জরুরি। প্রসঙ্গত, ব্রণ হওয়ার পিছনে এইসব ক্ষতিকর টক্সিনগুলি অনেকাংশেই দায়ি থাকে। তাই যত পানি খাবেন, তত কিন্তু ব্রণ কমতে শুরু করবে।
Add Comment