সুজুকি ৩৫০ সিসির নতুন মোটরসাইকেল আনছে
৩৫০ থেকে ৫০০ সিসি মোটরসাইকেল বাজার বর্তমানে এশিয়া ও ইউরোপে দ্রুত বাড়ছে। পারফরম্যান্স, সাশ্রয়ী দাম এবং কঠোর দূষণমান বজায় রেখে এই সেগমেন্ট এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় বিভাগের একটি। এমন চাহিদাই সুজুকিকে এই মাঝারি ক্ষমতার বাইক বাজারে আরও শক্তভাবে প্রবেশের পরিকল্পনা করতে উৎসাহিত করছে। সংস্থাটি ৩৫০ থেকে ৫০০ সিসি রেঞ্জে একাধিক নতুন বাইক আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সুজুকি যে ইঞ্জিনটি কাজে লাগাতে পারে তা হলো বিদ্যমান ৩৯৮ সিসি একক সিলিন্ডার, ইলেকট্রনিক জ্বালানি ইনজেকশনযুক্ত ইঞ্জিনের একটি উন্নত সংস্করণ। ইঞ্জিনটি ইতিমধ্যেই ইউরো ৫ প্লাস দূষণমান পূরণ করে এবং ৩৭ দশমিক ৫ অশ্বশক্তি উৎপাদন করে, যা ইউরোপের ‘এ-টু’ লাইসেন্স মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই একই ইঞ্জিন সুজুকির ডি-আর জেড ৪ এস এবং ডি-আর জেড ৪ এস এম মডেলে ব্যবহৃত হচ্ছে।
কার্বুরেটর ব্যবস্থা থেকে পুরোপুরি ইলেকট্রনিক জ্বালানি ইনজেকশন ব্যবস্থায় রূপান্তরিত এই ইঞ্জিনে দ্বৈত স্পার্ক প্লাগ, রাইড-বাই-ওয়্যার থ্রোটল এবং উচ্চ লিফট ক্যাম ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে পারফরম্যান্স আরও মসৃণ হয়েছে এবং কঠোর দূষণমান সহজেই পূরণ করা যাচ্ছে।
মডেলের নাম এখনো ঘোষণা নয়-
সুজুকি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মডেলের নাম জানাননি। তবে জানিয়েছে, তারা সেই বাজারেই জোর দিচ্ছে যেখানে চাহিদা সবচেয়ে বেশি। শুধু ব্রিটেনেই ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে ১২৬ থেকে ৫০০ সিসি সেগমেন্টে বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৪১৬টি মোটরসাইকেল। ওই সময় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া আধুনিক ক্লাসিক মোটরসাইকেল ছিল বিএসএ ব্যান্টাম ৩৫০, যার বিক্রি ছিল ৮৭টি।
রয়্যাল এনফিল্ড, ট্রায়াম্ফ, কেটিএম অনেক শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী-
৩৫০ থেকে ৫০০ সিসি সেগমেন্টে প্রতিযোগিতা অত্যন্ত তীব্র। রয়্যাল এনফিল্ড বহু বছর ধরে এই বাজারে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ক্লাসিক ৩৫০, বুলেট ৩৫০, হান্টার ৩৫০, মেটিওর ৩৫০—প্রতিটি মডেল দারুণ জনপ্রিয়।
এছাড়া ট্রায়াম্ফ ও কেটিএম, বাজাজের সঙ্গে যৌথভাবে ভারতে উৎপাদন বাড়িয়েছে। ট্রায়াম্ফের ৪০০ সিসি লাইনআপ বিশ্ববাজারেও জনপ্রিয়। অক্টোবর মাসে ট্রায়াম্ফের ৪০০ সিসি মডেলের বাজার দখল ছিল ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ। একই সময়ে জাওয়া-ইয়েজদি-বিএসএ গ্রুপের সম্মিলিত বিক্রি ছিল ৬ হাজার ৯২২টি, বাজার দখল ৫ দশমিক ১০ শতাংশ।
কেটিএম ৩৯০ মডেলটি ৩৫০ থেকে ৪৫০ সিসি তালিকায় দশম স্থানে রয়েছে। এছাড়া নতুন বিএমডব্লিউ এফ ৪৫০ জিএসও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আসছে। এই বাইকের উৎপাদন ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে টিভিএসের হোসুর কারখানায়। টিভিএস ও নরটন মোটরসাইকেলও এই ৪৫০ সিসি প্ল্যাটফর্মে নতুন মডেল আনতে চলেছে।
ভারত হবে সুজুকির নতুন উৎপাদন কেন্দ্র-
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উৎপাদন খরচ কমাতে ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলছে। সুজুকিও সম্ভবত একই কৌশল গ্রহণ করতে পারে। ভারতে সুজুকি ইতিমধ্যেই অ্যাকসেস, বার্গম্যান, অ্যাভেনিস, জিক্সার ও ভি-স্ট্রোম সিরিজের মাধ্যমে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। সংস্থার মাসিক বিক্রি নিয়মিতভাবে ১ লাখের বেশি।
হরিয়ানার খারখোদায় সুজুকির নতুন কারখানা নির্মাণ কাজ চলছে, যা বছরে ৭ লাখ ৫০ হাজার মোটরসাইকেল উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে প্রস্তুত হবে। এখানেই ৩৫০ থেকে ৫০০ সিসির নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হতে পারে, যা সুজুকিকে রয়্যাল এনফিল্ড, ট্রায়াম্ফ ও কেটিএমের সঙ্গে সমানে পাল্লা দেওয়ার সুযোগ দেবে।
বাজারে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত-
সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩৫০ সিসি সেগমেন্টে সুজুকির আগমন ভারতসহ আন্তর্জাতিক বাজারে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। এখন সবার অপেক্ষা সুজুকি কবে নতুন মডেলগুলোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়।
সম্পর্কিত সংবাদ
হোয়াটসঅ্যাপ নতুন ফিচার: মেসেজ রিমাইন্ডার করা যাবে
হোয়াটসঅ্যাপ তার নিয়মিত আপডেটের অংশ হিসেবে আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য নিয়ে এসেছে অত্যন্ত কার্যকর একটি নতুনবিস্তারিত…
সিম চালু না থাকলে বন্ধ হয়ে যাবে হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট
ভারতে বার্তা বিনিময়ের জনপ্রিয় অ্যাপ ব্যবহারে বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। দূরসংযোগ দপ্তরেরবিস্তারিত…
