গুনাহের কারণে অন্তরের যে দশা হয়

অন্তর বা কলব পরিবর্তনশীল। অন্তরকে যেদিকে পরিচালিত করা হয়, তা সেদিকে পরিচালিত হয়। মহানবী (স.) দোয়া করতেন—হে মনের প্রতিষ্ঠাকারী, আমার মনকে আনুগত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখুন। (ইবনে মাজাহ: ৮৮, আহমদ: ৪/৪০৮)।
গুনাহের কারণে অন্তরে কালো দাগ পড়ে যায়। গুনাহ বাড়তে থাকলে দাগের পরিধিও বাড়তে থাকে। রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, মুমিন বান্দা যখন গুনাহ করে তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। এরপর সে তাওবা করে ক্ষমা চাইলে তার অন্তর পরিষ্কার হয়ে যায় (কালিমুক্ত হয়)। আর যদি গুনাহ বেশি হয় তাহলে কালো দাগও বেশি হয়। অবশেষে তা তার অন্তরকে ঢেকে ফেলে। এটা সেই মরিচা, যার ব্যাপারে কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘কখনো নয়, বরং তাদের কৃতকর্ম তাদের অন্তরে জং ধরিয়েছে।’ (সুরা মুতাফফিফিন: ১৪; তিরমিজি: ৩৩৩৪)
রাসুল (স.)-এর বাণীর মর্মার্থ হলো যদি কেউ গুনাহে লিপ্ত হয়, তখন সর্বপ্রথম এই গুনাহের ক্রিয়া অন্তরে পড়ে। অন্তর নিকষ কালো হয়ে যায়। (ইবনে মাজাহ: ৪২৪৪)
কাজেই অন্তর স্বচ্ছ রাখার জন্য পাপমুক্ত জীবনে ফেরার বিকল্প নেই। রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, মানুষের শরীরে একটি গোশতের টুকরা আছে। যদি এই গোশতের টুকরা ভালো হয়ে যায় তাহলে পূর্ণ শরীর ঠিক হয়ে যায়। আর যদি ওই গোশতের টুকরা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে পূর্ণ শরীর নষ্ট হয়ে যায়। স্মরণ রেখো! ওই গোশতের টুকরার নাম অন্তর। (মুসলিম: ১৫৯৯)
এ হাদিস দ্বারা প্রতীয়মান হয়, কলবই দেহের প্রধান বস্তু। আর এ কারণে কলবকে পরিচ্ছন্ন রাখা অপরিহার্য। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আল্লাহ তাআলা মানুষের বাহ্যিক কলবকে আকৃতি ও সম্পদের দিকে তাকায় না, বরং তার কলব ও আমলের দিকে তাকান।’ (মুসলিম) এই হাদিস থেকে আন্তরিক ইবাদতের গুরুত্ব বোঝা যায়।
অন্তর পরিচ্ছন্ন রাখার উপায় হলো সর্বদা আল্লাহর জিকির করা, পরকালের চিন্তা করা, নিয়মিত কোরআন-হাদিস পাঠ করা, আন্তরিকতার সঙ্গে ইবাদত করা, তাওবা-ইস্তেগফার করা ও পাপাচার বর্জন করা ইত্যাদি।
পরকালে অন্তরের হিসাব হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যাপারে তোমার জ্ঞান নেই, তার পেছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ৩৬)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে অন্তর পরিচ্ছন্ন রাখার তাওফিক দান করুন। গুনাহমুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
সম্পর্কিত সংবাদ

ক্ষমা করলে মর্যাদা বৃদ্ধি পায়
জীবনে চলার পথে অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়। ওঠাবসা হয় বহু জনের সাথে। কারো সাথেবিস্তারিত…

হজে মাবরুরের ফজিলত
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা হজের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, এবং মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্যবিস্তারিত…