ঋণ করে হজ করার পর হজ ফরজ হলে কী করবেন

হজ ইসলামি শরিয়তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুকন ও ফরজ ইবাদত। আর্থিক ও দৈহিকভাবে সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের ওপর হজ ফরজ হয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর কাবাগৃহের হজ করা হলো মানুষের ওপর ফরজ—যার সামর্থ্য আছে এ পর্যন্ত পৌঁছার। আর যে তা মানে না, (জেনে রেখো) আল্লাহ সারা বিশ্বের কোনো কিছুর পরোয়া করেন না।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)
হজ জীবনে একবার ফরজ
হজ জীবনে একবার ফরজ। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের উদ্দেশে প্রদত্ত খুতবায় বলেন, লোকসকল! আল্লাহ আপনাদের ওপর হজ ফরজ করেছেন। এ কথা শুনে আকরা’ ইবনে হাবেস দাঁড়িয়ে গেলো এবং বললো, হে আল্লাহর রাসুল, প্রতি বছরই কি হজ করা ফরজ? রাসুল (স.) বললেন, যদি আমি বলি, হ্যাঁ, তাহলে ফরজ হয়ে যাবে আর যদি ফরজ হয়ে যায়, তাহলে আপনারা তা পালন করতে পারবেন না। জীবনে একবার হজ করা ফরজ। কেউ বেশি করলে সেটা নফল হবে। (সুনানে আবু দাউদ: ১৭২১)
ঋণ করে হজ করার পর হজ ফরজ হলে করণীয়
অস্বচ্ছল অবস্থায় কেউ ঋণ করে হজ আদায় করলেও তা ফরজ হিসেবেই আদায় হবে। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে হজ করলে তা নফল গণ্য হবে। তবে ঋণ করে যে হজ আদায় করছেন, তাতে ইহরামের সময় যদি সুনির্দিষ্টভাবে নফল হজের নিয়ত করে থাকেন তা নফল হিসেবেই আদায় হবে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে হজ ফরজ হলে তা পুনরায় আদায় করতে হবে। (গুনইয়াতুন নাসিক: ৩২; বাদায়েউস সানায়ে: ২/২৯৪; মানাসিক, মোল্লা আলি ক্বারি: ৪১; আলবাহরুল আমিক: ১/৩৮৬)
হজ না করার পরিণাম
সামর্থ্য থাকার পরও হজ না করার পরিণাম ভয়াবহ। ফরজ হজ ত্যাগ করলে ইহুদি-নাসারার মতো মৃত্যু হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে হাদিসে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ আদায়ে সামর্থ্য থাকার পরও তা আদায় না করে সে ইহুদি হয়ে মৃত্যুবরণ করুক বা খ্রিস্টান হয়ে—তাঁর (আল্লাহর) কোনো পরোয়া নেই।’ (তিরমিজি: ৮১২)
এছাড়াও হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ তাআলা হজ না করার পরিণতি সম্পর্কে বলেছেন, ‘যে বান্দাকে আমি দৈহিক সুস্থতা দিয়েছি এবং আর্থিক প্রাচুর্য দান করেছি, অতঃপর (গড়িমসি করে) তার পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়ে যায় অথচ আমার দিকে (হজব্রত পালন করতে) আগমন করে না, সে অবশ্যই বঞ্চিত।’ (ইবনে হিব্বান: ৩৭০৩)
হজের ফজিলত
অন্যদিকে, হজের ফজিলত সম্পর্কে নবীজি (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে হজ করল এবং এসময় অশ্লীল ও গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকল, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসবে।’ (বুখারি: ১৫২১)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘এক ওমরা আরেক ওমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহর ক্ষতিপূরণ হয়ে যায়। আর হজে মাবরুরের প্রতিদান তো জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সহিহ বুখারি:: ১৭৭৩; সহিহ মুসলিম: ১৩৪৯; মুসনাদে আহমদ: ৭৩৫৪; সহিহ ইবনে হিববান: ৩৬৯৫)
হজ ফরজ হওয়ার শর্ত
মুসলমান হওয়া, হজ ফরজ হওয়া সর্ম্পকে অবগত থাকা, বালেগ তথা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া, জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া, হজের মাস উপস্থিত হওয়া। (গুনিয়াতুন নাসিক: ১২-২২)
সম্পর্কিত সংবাদ

মুমিনের জন্য আল্লাহর নিরাপত্তা বিধান
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, একদিন আমি নবী কারিম (সা.)-এর পেছনে বসা ছিলাম। তিনি আমাকেবিস্তারিত…

৩০ দিন জমজমের পানি ছাড়া কিছুই খাননি যে সাহাবি
পবিত্র জমজম মহান আল্লাহর এক মহা নিদর্শন। মক্কায় অবস্থিত এ কূপের পানি শুধু পিপাসাকাতর কলিজাকেইবিস্তারিত…