লালন সম্রাজ্ঞী ফরিদা পারভীন আর নেই

‎একুশে পদক প্রাপ্ত লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে ১০টা ১৫ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসরত অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ঢাকা মেইলকে মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ফরিদা পারভীনের স্বামী গাজী আবদুল হাকিম। তিনি বলেন, ‘ফরিদা পারভীন আর নেই।’

এছাড়া ফরিদা পারভীনের মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন তার ছেলে ইমাম জাফর নোমানী। নিজের ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আম্মা (ফরিদা পারভীন) আজকে ( শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাত ১০:১৫ মিনিটে ঢাকায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর স্বীয় অনুগ্রহে আম্মার সকল ভুল ত্রুটি অপরাধকে মার্জনা করে আম্মাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।’‎

‎এর আগে গত ৫ জুলাই গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গায়িকার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দেশের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। চিকিৎসা শেষে ২১ জুলাই রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাড়ি ফেরেন তিনি।

‎এরপর গত ২ সেপ্টেম্বর ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। গায়িকার শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপ হতে থাকলে গত ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটা থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে সংগীত অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিকমাধ্যম অনেকেই তারা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।

১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর নাটোর জেলার সিংড়া থানার শাঔঁল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। লালন সংগীতশিল্পীর বাবা প্রয়াত দেলোয়ার হোসেন পেশায় ছিলেন সাধারণ চিকিৎসক। মা রৌফা বেগম।

‎ওস্তাদ কমল চক্রবর্তী কাছে সংগীতের হাতখড়ি নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ওস্তাদ রবীন্দ্রনাথ রায়, মোতালেব বিশ্বাস এবং ওসমান গণি’র কাছে ক্ল্যাসিক্যাল শেখেন। প্রায় ছয়-সাত বছর তানপুরার সঙ্গে ক্ল্যাসিক্যাল চর্চার পর তিনি নজরুল সঙ্গীত শিখতে শুরু করেন। ওস্তাদ আবদুল কাদেরের কাছে নজরুল সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন।

‎এরপর তিনি মেহেরপুরে মীর মোজাফফর আলী’র কাছেও নজরুল সঙ্গীতের তালিম নিয়েছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত নজরুল সঙ্গীত শিল্পী নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে লালন সংগীতের তালিম নেন ফরিদা পারভীন।

‎সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান তিনি। এছাড়াও অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা রয়েছে তার। এছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে।

‎শিশুদের লালন সংগীত শিক্ষার জন্য ‘অচিন পাখি স্কুল’ নামে একটি গানের স্কুল গড়ে তুলেছিলেন তিনি।

নিউজটি ফেসবুকে শেয়ার করুন ...
fb-share-icon





সম্পর্কিত সংবাদ

  • ফের আইসিইউতে ফরিদা পারভীন
  • সাড়া ফেলেছে তুর্কি ধারাবাহিক ‘মোস্তফা’
  • ভাঙা হাতে ছেলের অভিষেক অনুষ্ঠানে শাহরুখ
  • যে কঠিন শর্ত মেনেই শিল্পাকে বিয়ে করেন রাজ কুন্দ্রা
  • বিশ্বের সুন্দরী অভিনেত্রীর তালিকায় হানিয়া আমির
  • আইয়ুব বাচ্চুর জন্মদিনে রাজধানীতে বিশেষ আয়োজন
  • ‌দুই দশক পর বিটিভিতে ‘নতুন কুঁড়ি’
  • Copy link
    URL has been copied successfully!