বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক নতুন করে গড়ার এখনই সময়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক নতুন করে গড়ে তোলার এখন সময় এসেছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্টে ভাষণ দেয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তোলার এটাই সময়। আমাদের অংশীদারিত্বকে দেখার ক্ষেত্রে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ঘটানো প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা ও মর্যদা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, এ সমস্যা সমাধানে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টারে স্পিকার্স হাউস স্টেট রুমে ‘বাংলাদেশ অ্যাট ৫০: দি রিজিলেন্ট ডেল্টা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন।

পার্লামেন্ট সদস্য রুশানারা আলী, হাউস অব লর্ডসের সদস্য লর্ড জিতেশ গাধিয়া ওয়েস্টমিস্টিারে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সত্যিকার অর্থেই দু’দেশের সম্পর্ক বর্তমানে কৌশলগত হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে শান্তিরক্ষা, সন্ত্রাস দমন, সামুদ্রিক ও বিমান পরিবহন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের সহযোগিতার ওপর দৃষ্টি দিতে হবে।

তিনি বলেন, প্রানবন্ত ব্যক্তিত্ব ব্রিটিশ-বাংলাদেশি অভিবাসী দু’দেশের অংশীদারিত্বের কেন্দ্রে অবশ্যই বজায় থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অভিবাসীদের নিয়ে আমরা গর্ববোধ কর্রি। ওয়েস্টমিনিস্টারে তাদের ক্রমবর্ধমান প্রতিনিধিত্ব দেখে আমি আনন্দিত। আবার তাদের সকলেই নারী। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বৈচিত্রপূর্ণ এই মহান পার্লামেন্টে তাদের আরো অনেকে নির্বাচিত হবেন।’

রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান খুঁজে বের করতে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরো বলেন, সংকট নিরসনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ২০১৭ সালের আগষ্ট থেকে এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু কক্সবাজারের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ আরো তীব্র হচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো শিগগিরই এ অঞ্চলে এবং এর বাইরেও বিস্তার লাভ করতে পারে।’

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে অবিলম্বে নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সংকট জিয়িয়ে রেখে সংশ্লিষ্ট সকলের অর্জন হবে কেবল শূন্যই।’

স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনা ও প্রতিশ্রুতির দেশ হিসাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অতীতের স্থিতিস্থাপকতা থেকে দেশ শক্তি অর্জন করেছে। এখন দেশ সুযোগ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত, একটি মিশন ও ভিশন নিয়ে তাকিয়ে আছে ভবিষ্যতের দিকে।’

প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতি, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুত ও জ্বালানী এবং ডিজিটালাইজেশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্জন ও উন্নয়নের কথা সংক্ষেপে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮.১৫ সহ বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গড় হার ৬ শতাংশের ওপরে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি (মোট অভ্যন্তরীন উৎপাদন) ২০০৮ সালের ২৪৩ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৩২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে এবং নাম মাত্র জিডিপি’র ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বে ৪১তম।
তিনি বলেন, সরকার গত এক দশকে দারিদ্রতার হার ৩১ দশমিক ৫ ভাগ থেকে ২০ দশমিক ৫ ভাগে কমিয়ে এনেছে। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর।

তিনি আরো বলেন, মাথাপিছু আয় ২০০৮ সাল থেকে তিন গুন বৃদ্ধি পেয়ে এ বছরে হয়েছে ২২২৭ মার্কিন ডলার। অপর দিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাত গুন বেড়ে ২০২১ সালে হয়েছে ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশ ছিল একটি পরিবর্তনের অঙ্গীকার। আমাদের সরকার মূল ভিত্তি গড়ে দিয়েছে এবং আমাদের জনগণ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’






Related News

  • ভোটে বাধা দিলেই প্রতিহত করা হবে: ওবায়দুল কাদের
  • স্মার্ট সোনার বাংলা গড়ার সুযোগ চাই: শেখ হাসিনা
  • সন্ত্রাস-হত্যাকাণ্ড দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না: প্রধানমন্ত্রী
  • জ্বালাও-পোড়াওকারীদের ‘না’ বলুন : প্রধানমন্ত্রী
  • নাশকতাকারীদের কোনো ক্ষমা নেই : প্রধানমন্ত্রী
  • কুমিল্লার মেয়র রিফাত আর নেই
  • জি এম কাদের জাতীয় পার্টি দখল করেছেন: রওশন এরশাদ
  • হামলা করলে মামলা হবেই: ওবায়দুল কাদের
  • %d bloggers like this: